ডিজিটাল মা

লেখক: সংগৃহিত Category: কৌতুক (Jokes) Edition: Dhaboman - Winter 2020

রোজ রাতেই আমি টের পাই আমার বড় মেয়ে রাতে পুনুর পুনুর করে ফোনে কথা বলে।
আমি ওর রুমে গেলেই একেবারে চুপ হয়ে ঘুমের ভান ধরে ব্যাঙ্গের মতন পড়ে থাকে। আমি ওর মা আমিও এমন করে ওর বাপের সাথে প্রেম করতাম। তখন ফোন ছিল না, রাতে চিঠি আদান-প্রদান করতাম। আব্বারে দেখলে আমিও ব্যাঙ মরার মতন পড়ে থাকতাম।
ভাবলাম আমার কিছু একটা করতে হবে। আমার আব্বা আমার কলেজে যাওয়া অফ করে দিয়েছিল।
তাই আমি পালিয়ে এসেছিলাম কিন্তু আমি ডিজিটাল মা, আমার এসব করা চলবে না।
টেকনিক করে, মেয়ে যখন ওয়াশ রুমে গেল ওর ফোনখানা নিয়ে দেখি রিসিভ কল ভর্তি হয়ে আছে একটি নাম্বার। আর তা জান নামে সেভ করা। সুন্দরভাবে ওই নাম্বারটা টুকে নিলাম।
ব্যাস! রান্নাঘরে গিয়ে ওই নাম্বারে মেসেজ দিলাম, জান আমি লিমু, এটা আমার নিউ নাম্বার। আগের নাম্বারে ভুলেও কল দিবা না। ওটা মায়ের কাছে। ওই নাম্বার ব্লক লিস্টে দাও। এখন থেকে মেসেজিং করব। মা টের পেয়েছে সব তাই কিছুদিন কথা বলা যাবে না
ওপাশ থেকে টং করে ফেরত মেসেজ, আচ্ছা জান!
কি করছো সোনা?
মনে মনে ভাবি, তোরে একবার হাতের নাগালে পাই সোনা পুড়ে তামা বানামু।
আমি মেসেজ দিলাম, কিছু না জান, মন খারাপ। এভাবেই আমাদের মেসেজিং চলতেই রইল, চলতে রইল,৫ দিনের মাথায় আমি ভোর রাতেও বারান্দায় গিয়ে মেসেজিং করি। আমার বর মহাশয় ইদানিং আমার দিকে কেমন সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়! তাতে কিছুই আসে যায় না। আমার মেয়ের লাইফ আগে। আমি কিছুদিন মেসেজিং করলে আমার মেয়ে এদিক থেকে ওই ছেলেকে ভুলে যাবে। ইদানিং আমার মেয়েকেও মন মরা দেখি। নাম্বার ব্লক লিস্টে দিয়েছে কিনা!
যাক, অবশেষে আমি ভাবলাম আমি সেই ছেলের সাথে দেখা করি। ওকে গিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসবো ।তাহলে সাকসেস!
সাজুগুজু করছি, মন বেশ ফুরফুরা লাগছে আজ সেই বেয়াদবকে চরম ধোলাই দিবো।
আমার বর মশাই পেপার পড়া বাদ দিয়ে আমায় আর চোখে দেখছে আর জিজ্ঞেস করছে কি! কই যাও?
ওকে বললে ও ব্যাপারটা নিয়ে হাইপার হবে।
তাই বললাম বাজারে কিছু কেনার আছে
এই বিকেল বেলা?
তো? মধু নাই বাসায়, তুমি তো জানো সকালে খালি পেটে আমি মধু খাই। ডায়েটে আছি তো।
বাসা থেকে নেমে পার্কে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি,অল্প বয়সী কাউকেই দেখছি না। কিন্তু আমার বরের চেয়েও বয়স্ক লোক আমার পাশে ঘুরঘুর করছে।
ফোনটা হাতে নিয়ে আবার মেসেজ দিলাম কই তুমি?
ওপাশ থেকে মেসেজ না দিয়ে কল দিল!
আমি রিসিভ করে চুপ করে আছি, কি অদ্ভুত!!
আমার পাশে দাঁড়ানো লোকটির কানেও ফোন আর আমার দিকে শকুনের মতন তাকিয়ে আছে, আমি কেটে দিয়ে আবার কল দিলাম,
আমি আরো শিহরিত হলাম!!
ফোন বাজছে ওই লোকের হাতের টাই!!!
রেগে গিয়ে বললাম, আপনিই সেই মানুষ!
ছিঃ!! মেয়ের বয়সী একজন এর সাথে প্রেম করতে লজ্জা লাগে না?
আবার তারে জান, সোনা ডাকেন!
লোকটি তীব্র দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে, বেত্তমিস মহিলা!তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে আর এখন বাচ্চার বয়সী ছেলেকে বিরক্ত করেন!
ঝগড়ার একপর্যায়ে জানতে পারলাম, আমার মেয়ে ওই লোকের ছেলের সাথে প্রেম করে। তিনি তার ছেলের ফোন নিয়ে গেছিল, আর আমি এতদিন তার ছেলে ভেবে তার সাথেই প্রেমালাপ করছিলাম!
দুজন ই এক পর্যায়ে হাসতে হাসতে মরার উপক্রম হয়েছে। দুই ব্যর্থ গোয়েন্দাই এক পর্যায় কফি শপে বাসলাম। নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য সরিও বললাম, তিনিও বললেন। ভাবলাম বিয়াই হিসেবে ছেলের বাবা মন্দ না। হেসে হেসে বললাম ছেলের ফোনটা বাসায় গিয়ে ছেলেকে দিয়ে দিয়েন, আমার মেয়ে খুবই মন মরা হয়ে আছে।
সে উঠে বলল, আগে মেসেজিং গুলি মুছে নেই। এমন প্রেমালাপ দেখলে মামলা খেয়ে যাবো হাহাহা
            
            </div>
          <p></p>
                <div>
                <div style=