স্বপ্ন ভঙ্গ

লেখক: আল মামুন জাহাঙ্গীর Category: প্রবন্ধ (Essay) Edition: Dhaboman - Eid 2019

 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় হাবিব নামের এক সহপাঠি প্রায়ই বলত, পাশ করার পরে আমাদের যখন দেখা হবে তখন হয়ত আমাদের সাথে থাকবে বউ ও বাচচারা। প্রত্যেক মানুষই ভবিষ্যত নিয়ে ভাবে,সবারই স্বপ্ন থাকে।আমারও এরূপ প্রত্যাশা থাকা অস্বাভাবিক নয়।  বন্ধুদের বউয়েরা আমার বউয়ের সাথে  যাওয়া-আসা করবে, বাচচারা পরস্পরকে চিনবে , বন্ধুত্বকে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে নিয়ে যাবে এরূপ স্বপ্ন তো থাকতেই পারে।

১৯৬৩ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগে সম্মান শ্রেনীতে ভর্তি হই। সে সময়ে আজকের মত শিক্ষার্থী গিজগিজ করত না। আমাদের আগের ব্যাচে ছিল দুজন, উভয়েরই নাম আনোয়ার। আমরা একজনকে বড় আনোয়ার অপর জনকে ছোট আনোয়ার হিসাবে চিহ্নিত করেছিলাম। তা অবশ্য বয়স দিয়ে নয় আকৃতি দিয়ে। শুনেছি পাশ করার পর বড়জন ক্যাডেট কলেজে অধ্যাপনা করছেন। অন্যজন প্রথমে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যোগদান করলেও পরে সরকারী কলেজে চলে আসেন। চট্টগ্রাম কলেজে তিনি আমার সহকর্মী ছিলেন। আমরা মোট দশজন ভর্তি হলেও কয়েক দিন পরে রেজাউল করিম পরিসংখ্যান বিভাগে চলে যায়। যে কয়দিন তাকে পেয়েছি এর মধ্যেই তার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। সে তার অতীত ও বর্তমান সবই বলেছে। মতিনা  ভাবীর সাথে তার কিভাবে প্রনয় হয়। মতিনা ভাবী শৈশবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নৃত্য শিল্পী ছিলেন। তাদের বাসাটি গোপিবাগে রওশন জামিলের পাশের বাসা ছিল। বিয়ের পরেও রেজাউল অনেকদিন ছিল। তার বাসায় গেলে রওশন জামিলের বাসায় পাঠিয়ে আমার মেয়েদেরকে তাঁর সাথে দেখা করিয়ে আনি। মতিনা ভাবীর আত্মীয় হিসাবে গুলজারকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে পেয়ে যাই। সে অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পাশ কোর্সে ভর্তি হয়েছিল। সাবসিডিয়ারীতে তার সাথে আমাদের ক্লাশ ছিল। তার বাড়ী ছিল পশ্চিম বংগের মুরশিদাবাদে। তার দিনাজপুরে অনেক জমি ছিল,ঢাকায়ও একটা বাড়ী ছিল। কি কারনে সে ভারতে চলে যায়। যাবার সময় সে তার বাড়ীটি আমার কাছে বিক্রী করতে চেয়েছিল কিন্তু আমার কেনার সামর্থ ছিল না। অনেকদিন পরে রেজাউলের কাছে খবর নিয়ে জানতে পারলাম সে সেখানে গিয়ে সংসারীও হয়েছিল,হঠাৎ করে অকাল মৃত্যু ঘটে।

রেজাউল চলে যাওয়াতে আমরা রইলাম নয়জন,সাতজন  ছেলে ও দুইজন মেয়ে। আমি,রেজাউর রহমান(মিষ্টু),আবুল হাশেম,মুরশেদুর রহমান,হাবিবুর রহমান, সামসুল হক,আনন্দ চন্দ্র বৌদ্ধ, শামিম করিম ও মিনুফার চৌধুরী। ছেলেরা পড়ালেখায় তেমন মেধাবী না হলেও মেয়েরা এদিক দিয়ে এগিয়ে। শামীম ছাত্রী হিসাবেই তুখড়ই ছিলনা, সুন্দরী হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা। মিনুফারের গায়ের রং ফর্সা না হলেও গানে তার দক্ষতা ছিল,সে নাকি রোকেয়া হলে নজরুল সংগীতে পুরষ্কৃত হয়েছে। আজকালের মত ছেলে মেয়েদের মধ্যে দহরম মহরম ছিল না। আজকালের মত একসাথে বসে জটিল অংকের সমাধান করতনা। তাদের জন্য বিভাগেও আলাদা বিশ্রামাগার ছিল। তারা স্যারদের পেছনে পেছনে ক্লাশে এসে ক্লাশ করেই সোজা বিশ্রামাগারে চলে যেত। কোনদিন স্যারদের ক্লাশে আসা টের না পেলে স্যার এসে আমাদের কাউকে ডেকে আনতে বলতেন। আমরা গিয়ে "স্যার ক্লাশে গেছেন" বলে চলে আসতাম,এটুকুই তাদের সাথে আলাপচারিতা। গনিত বিভাগের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ছিল ফখরুদ্দিন ভাই। তিনি তার ক্ষুদ্র কুঠরিতে হালকা নাস্তা রাখতেন। আমরা সেখানেই নাস্তা করতাম এবং দুপুরের খাবার খেতাম সাইন্স ক্যাফেটরিয়াতে, জোহর নামাজ পড়তাম তার উত্তর পাশে একটি পুরান মসজিদে। ফজলুল হক হল ও শহীদুল্লাহ হলের মাঝখানে যে পুকুরটি আছে তার উত্তর পাড়ে বিজ্ঞান লাইব্রেরী ভবনের তিন তলায় পশ্চিম পাশে গনিত এবং পূর্ব পাশে পরিসংখ্যান বিভাগ ছিল। পরে এগুলি সায়েন্স এনেক্স ভবনে চলে যায়।

সে সময়ে বিজ্ঞানে সবচেয়ে চাহিদাপূর্ন বিষয় ছিল  পদার্থ ,নুতন বিষয় হিসাবে তার পরেই ছিল পরিসংখ্যান,আর কলা বিভাগে অর্থনীতি। তাই এসব বিষয়ে বাঘা বাঘা শিক্ষার্থীরা ভর্তি হত। সাবসিডিয়ারী এক হওয়াতে  তাদেরকে সহপাঠী হিসাবে পেয়েছি।

কিছু দিনের মধ্যেই আমার মিষ্টু ও হাশেমের মধ্যে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। তারা দুইজন দুইটি মেয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। তাদের সাথে কবে, কখন কি কথা হল,কি ঘটনা ঘটল তা বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলত। আমরা ছুটির পর চলে যেতাম লাল বাগের কেল্লায়। প্রায় ৯ টা পর্যন্ত গল্প চলত। ১০ টায় বাসায় ফিরে খেয়েই ঘুমিয়ে পড়তাম। আজ উপলব্ধি করি ,সেদিন যদি অযথা সময় নষ্ট না করে পড়াশোনা করতাম তা হলে হয়ত জীবনটা আরো উন্নত হত।

বিভিন্ন ঘটনার(যা অল্প পরিসরে বর্ননা সম্ভব নয়) মাধ্যমে চারটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল।পাশ করার পর আমরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লাম। আমার চাকরী হল চট্টগ্রাম সরকারী উচচ মাধ্যমিক কলেজে যা পরে হাজী মহসিন কলেজ নামে আত্ম প্রকাশ করেছে। ছুটিতে ঢাকা গেলেও কারো সাথে যোগাযোগ নেই। যে যেখানেই থাকুক কনভোকেশনে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে মিলিত হয়,গাউন পরে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ছবি তোলে, সহপাঠীদের সাথে দেখা  করে,স্মৃতি রোমন্থন করে, এক সাথে ঘুরাফেরা,খাওয়া-দাওয়া,আনন্দে কয়েকটাদিন কাটে ভাল। বিয়ে হয়েছে কিনা,হলে বউ কেমন ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তা হয়নি। রাজনৈতিক কারনে বেশ কয়েক বছর সমাবর্তন বন্ধ ছিল। তবে মিষ্টু পলিটেকনিক কলেজে এবং হাশেম গাজীপুর কলেজ যোগদান করেছে বলে জানতে পেরেছি, এতটুকুনই।

দেখত দেখতে অনেকদিন হয়ে গেল, ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে ছুটিতে ঢাকা গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে দুলাভাইয়োর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি জানালেন যে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। এ সময়ে বড় ভাই সদর ঘাটে প্রধান ডাকঘরের বড় কর্তা।নিচ তলার অফিস আর উপর তলায় বিরাট বাসা। এ বাসায় আমি কয়েক দিন ছিলাম। মিষ্টু নবাবপুরে তার বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করেছে,ছুটিতে ঢাকা আসলে সে সেখানেই উঠে। কারো কাছে আমার অবস্থান জানতে পেরে প্রায়ই সকালে এসে সারাদিন গল্প করে বিকালে যেত। তাকে আমার বিয়ের কথা জানাই ও হবু বউয়ের ছবি দেখাই।

বিয়ের পরে  এক ঈদের ছুটি নিজ বাড়ীতে আরেক ঈদের ছুটি শ্বশুর বাড়ীতে কাটাতাম। তাই ঢাকাতে অবস্থান করে এদিক সেদিক ঘুরাফেরার সুযোগ হত না। শুনেছি যারা ঢাকার বাইরে চাকরী করে তারা ঢাকাতে আসলেই একবার না একবার শিক্ষা ভবনে গিয়ে  অফিস সহকারীদের হাত করে তার সুবিধা মত অবস্থান নিশ্চিত করা বা সুবিধা মত পোষ্টিং নেওয়ার চেষ্টা করে। আর যাদের অবস্থান ঢাকায় তারা তা চিরস্থায়ী করার জন্য প্রতিদিন কলেজ করার পর শিক্ষা ভবনে নজরানা দিতেই হবে। শুনেছি মুরশেদ নাকি ঢাকাতে পাকাপোক্ত হয়ে বসেছে। তাকে নারায়নগঞ্জে বদলী করা হলে সে তদবির করে  আদেশ প্রত্যাহার করিয়েছে। সিলেটে পদোন্নতি দিলে সে তা গ্রহন করেনি। তার খুটার জোর নাকি সচিবরা।

চট্টগ্রাম কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে আমার পদোন্নতি হলে পদোন্নতি পত্র আনার জন্য শিক্ষা ভবনে গিয়ে অফিস সহকারীর সাথে দেখা করলে তিনি অবাক হয়ে বলেন, আপনি এত বছর চাকরী করেছেন আপনাকে তো কোনদিন দেখিনি। ভাবখানা যেন তাদের সাথে দেখা করা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেখানেই  মুরশিদের সাথে দেখা।তার কাছেই শুনতে পেলাম সামছুল হক সিলেটে কোন এক কলেজে যোগদান করে শিক্ষা অফিসকে না জানিয়ে লন্ডনে চলে যায়। আর শিক্ষা অফিস অজ্ঞতা বশত: তার অনুপস্থিতিতেই আমাদের সাথে তাকে পদোন্নতি দিয়ে দেয়। এ নিয়ে মুরশিদের ভাবনার শেষ নেই,সে লন্ডন থেকে কিভাবে যোগদান করবে। তার এই উৎসাহকে নিবৃত্ত করার জন্য সে সহকারী পরিচালকে জিজ্ঞেস করতে অনুরোধ করে। পত্র হাতে পেয়ে আমাদের সাথে সামসুল হকের নাম দেখতে পেয়ে বোকার মত আমি তাঁর কাছে লন্ডন থেকে কিভাবে যোগদান করবে জানতে চাইলে তিনি বিব্রতবোধ করেন ও আমার কাছ থেকে পত্রটি চেয়ে ফিরত নিয়ে বলেন, আজ আপনারা চলে যান,কিভাবে এমন ত্রুটি হল তা জেনে সংশোধিত পত্র কলেজে পাঠিয়ে দেয়া হবে। অগত্যা আর কি করব, আমার বন্ধু নাজমুল হোসেনকে খোঁজ নিয়ে আমাকে জানানোর অনুরোধ করে ফিরে আসলাম। হোসেন ভাই প্রায় প্রতিদিন খোঁজ নিয়ে বিফল হয়ে ফিরে আসেন। সেই আদেশ আমার হস্তগত হয় দুইমাস পরে। এরই মধ্যে অন্য বিভাগের অনেকে যোগদান করে ফেলেন বলে আমি জুনিয়র হয়ে যাই।

হাবিবও একটি মেয়ের প্রতি আসক্ত ছিল। আমরা তাকে  নিয়ে অনেক হাসি ঠাট্টা করেছি। তার হাতের লেখা খুবই অস্পষ্ট ছিল। সে এখান থেকে পাশ করে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন শাস্ত্রে কৃতিত্বের সাথে পাশ করে সেখানে অধ্যাপনা শুরু করে। আমার স্ত্রীর সেজবোন ও দুলাভাই সেখানে অধ্যাপনা করে। তাদের বড় মেয়ে সুসমির বিয়েতে আমরা সেখানে কয়েক দিন অবস্থান করি। একদিন সময় করে হাবিবের বাসায় যাই। হাবিবের বউ রাজশাহীতে আইন ব্যবসা করে। বিয়ের নানান অনুষ্ঠানে আমার মেয়েরা স্ফুর্তি করছে বলে তাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে যাইনি। তার এক ছেলে ও এক মেয়েও সেদিন বাসায় ছিলনা। তাই তার বউ ও তাদের সন্তানদের সাথে দেখা হয়নি। এদিন বিকালটা বেশ ভালই কেটেছিল। হাবিবের কাছেই শুনতে পেলাম শামীম  একটি প্রাইভেট অফিসের বড় কর্মকর্তা।

আবাসিক এলাকার মসজিদটি তাদের বাসার কাছেই ছিল। আজান শুনে পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ পড়ার সুযোগ হয়েছিল। আমাকে দেখে মুসল্লিরা প্রায়ই প্রশ্ন করত, কোত্থেকে এসেছেন,কার বাসায় এসেছেন? আমরা বিয়েতে এসেছি তা বিশ্বাসই করতে চাইতেন না। শুক্রবার দিন বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে জুম্মা পড়তে গেলে  পূর্ব পরিচিত এক ভদ্রলোকের সাক্ষাৎ পাই। তাঁর তখন সম্ভবত:  রাজশাহীতে পোষ্টিং। তিনি সেদিন তাবলীগ জামাতের সাথে এসেছেন। তিনি নোয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ছিলেন।তিনি আবাসিক কলোনীতে আমার একই বিল্ডিং -এ বসবাস করতেন এবং তাঁর বড় মেয়ে মিলি নোয়াখালী কলেজের ছাত্রী ছিল। এই সব কারনে আমাদের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল। কোর্ট মসজিদে বা জামে মসজিদে গেলে মাঝে মাঝে তবলীগের বয়ান শুনতে হত। বয়ান শেষে কে কে তবলীগে সময় দিতে চান তাদের নাম লিখাতে  চাপ সৃষ্টি করা হত। সরকারী কর্মকর্তাদের ছুটি না থাকার কারন দেখিয়ে অব্যাহতি পেত। কিন্ত তিনি প্রতিদিনই নাম লেখাতেন। সরকারী কর্মকর্তা হয়ে তিনি সব সময় নাম লেখান এটা আমার মনে খটকা লাগে। একবার নাম লিখিয়েও যাননি দেখে প্রশ্ন করাতে তাঁর জবাব ছিল,নাম লিখালেই সওয়াব,যেতে পারলে আরো সওয়াব,সুযোগ হয়নি তাই যাইনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই শুনলাম,পদার্থ বিভাগের জনৈক অধ্যাপক নাকি বছরের অধিকাংশ সময়ই দেশ-বিদেশে তাবলীগে সময় দেন। সৌভাগ্যক্রমে তাঁর সাথে দেখা হয় তিনি নোয়াখালীতে তাবলীগে আসলে। তিনি একদিন দাওয়াত দিতে আবাসিক কলোনীর আমার বাসায় আসেন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিতের ছাত্র জেনে তিনি জানালেন যে তাঁর স্ত্রীও তাই। আলোচনা প্রলম্বিত হলে জানা গেল যে তিনি আর কেহ নহেন আমার সহপাঠিনী মিনুফার।

১৯৯৫ দিকে আমি তখন শরীয়তপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ছাত্র শিক্ষকরা মিলে শিক্ষা সফরে বরিশালে যাই। বরিশাল মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের পর আমরা বি এম কলেজে মধ্যাহ্ন ভোজ সম্পন্ন করি, মাননীয় অধ্যক্ষও আমাদের সাথে ভোজে অংশ গ্রহন করেন। সেখানে কর্মরত নোয়াখালী কলেজে আমার প্রাক্তন সহকর্মী মোল্লা জালালের সহায়তায়  সেখানে কর্মরত আনন্দের বাসায় যাই। সে তো আমাকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। বেশীক্ষন থাকতে পারিনি বলে সে খুব আফসোস করল। সেদিন তার বউ ছেলে মেয়েরাও বাসায় ছিলনা। এভাবে কারো বউ ও ছেলেমেয়েদের সাথে আমাদের কোনদিনই দেখা হল না। তবে মিনুফারের সুদর্শন স্বামীকে দেখে আমার খুব ভাল লেগেছিল। এভাবে আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হলেও রেজাউলের সাথে আজও যোগাযোগ আছে। সে ভারত থেকে পিএইচডি করার পর কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার হিসাবে যোগদান করলে আমার স্ত্রীর চাচাত বোনের ছেলে ও  সেখানকার অর্থনীতির অধ্যাপক ড: মামুনের সহযোগিতায় তার অবস্থান জানতে পারি। আমার ছোট মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রনে সে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসাতে কি যে ভাল লেগেছিল,আমার সব দু:খ দূর হয়েছিল।