খুব ভীষণ ইচ্ছে করে
খুব ভীষণ ইচ্ছে করে, কাছে গিয়ে
শরতের ধবধবে, সাদা কাশফুলটা ছুঁয়ে দেখতে।
সামনে ছোটা সময়টাকে ফাঁকি দিয়ে,
কিছুটা পেছনে ফিরে গিয়ে।
নারে ধ্রূব,
পেছনে ফেলে আসা সময়ের মঞ্চটাতে,
তেমন কোনো স্মৃতি জমা নেই আমার।
বড়জোর কখনো কখনো সেখানে,
ভুলে যাওয়া শৈশবের
নিদ্রা পালানো রাতের মত,
আতশবাজির দলেরা অপেক্ষায় থাকে
জোনাকির সাজে জ্বলে উঠবে বলে।
একই নেশাতে আমিও এখন নিদ্রা ভুলি,
প্রতিদিনের সূয্যি পালানো নিশিথে।
শুধু পার্থক্য এইটুকু যে,
এখনকার রাতগুলো ভীষণ বদলে গেছে।
শরতের স্বচ্ছ আকাশে ভীড় করেছে,
অসময়ের ঘোলাটে হেমন্ত।
সব কথা বলেনি ধ্রুব
কথায় ভীষণ জব্দ।
ব্লাকবোর্ডের দেয়ালে লেখা
বাকি কিছু শব্দ।
ফেরিওয়ালা হেঁটে গেছে দুরে
শ্রাবন দিনের বৃষ্টি ভাঙা সুরে,
পেছন ফিরে ডাকা হয়নি যারে।
মাথার ওপর ঘোমটা ছিল তাহার
হয়নি দেখা আঁচল ফেলা বাহার,
লাজুক ছেলের ভাল লাগার ভারে।
হয়নি খানিক সবুজ টিয়ের
পেখম ছুঁয়ে দেখা।
বায়োস্কোপের ভেতরে যাহার
নামটি ছিলো লেখা।
এখন আমার একলা কাঁটে
হলদে ধানের মেলায়।
খেলার শেষে সূয্যি ডোবে
সন্ধ্যে রাতের বেলায়।
সূয্যি ডোবা আঁধার বেলায়
হিসেব ভোলা মনে।
আর কিছুনা, "না" টাকেই আজ
বেঁচব আমি বনে।
পুরনো পিয়ানোটার শব্দে
কাশফুলেদের ভোর হয়েছে আবারো।
ঘুমভাঙা সবুজ ভোর।
মধ্য শরতের ঐ ধুসর ভোরে
বিহঙ্গ খুজে নেয় "মেঘের বাড়ি"।
জোয়ার ভরা জলে ভেসে
নীলপদ্মেরা খুঁজে পায়
"রূপকথার গল্প"।
যদিও শিরোনামহীন সেসব রূপকথাদের
তেমন কোন অর্থ থাকে না।
তবুও তো রাত্রি নেমে এলে
জেগে থাকে চাঁদের বুড়ি।
রূপকথার গল্প শোনাতে।
সেই অভ্যেসে আমিও একদিন
গল্প শোনাতে শিখি।
ভোর থেকে সন্ধ্যে।
সন্ধ্যে থেকে ভোর।
প্রতিদিন একটু একটু করে
গল্পের পাতা ঝরে যায় নিজেদের মত।
আমি জানি।
ঐ গল্পেরাই একদিন রূপকথা হবে।
যেখানে শেষ পাতাটা খুঁজে পাবে,
আমাদেরই হাতরে দেখা সব
সবুজ সুখের সাতকাহন।
শ্বেত সামিয়ানার ঠিক নীচেই
নীল অপরাজিতার খেলা ছিল,
খুব যেন বেশি এলোমেলো।
পাগড়ী বেধে নিয়ে,
আমাদের গানওয়ালা সেখানে
সুর মেলাত সবুজের গানে।
অদূরে মুসাফিরের কাফেলা থমকে যেত
প্রয়োজনীয় অবসর খুজে নিয়ে।
ইদানিং,
শ্রাবণের বুড়ো মেঘেদের বিলাসীতায়,
গানওয়ালাকে ভীষণ ফিরে পেতে
ইচ্ছে হয় আমার।
খাঁচা ভাঙা শালিকেরা তাই
খুজে এনেছে নতুন কিছু শব্দ।
গানওয়ালার গান বেধে দিতে।
আমার বোবা উস্কানিতে,
নীল আকাশের অনেকটা নীচে
বন্ধু ধ্রুব তুলে দিয়েছে,
ফিরে আসবার স্বাগত পতাকা।